১৯৮৯ সালে ঢাকা সিটি কলেজ শহরের শ্রেষ্ঠ কলেজের মর্যাদা লাভ করেছিলো।তবে দূর্ভাগ্য হলেও সত্য নববই সালে ঢাকা সিটি কলেজ একটি অভিশপ্ত বছর অতিক্রম করলো।

গণ অভ্যুত্থানের সময় রাজনীতি মুক্ত কলেজে রাজনীতির প্রবেশ কলেজের চলমান প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করলো।মাঝপথেই কলেজ বন্ধ ঘোষণা করতে হলো অধ্যক্ষ হাফিজকে।

এত কিছুর পরও ৯১ সালে কলেজের ফলাফল খুবই ভালো হলো। তবে রয়ে গেলো রাজনীতির অশুভ ছায়া।

আমরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। এর মধ্যে যারা পাশ কোর্স এ ভর্তি হবে তারা অনেকে ঢাকা সিটি কলেজে ভর্তি হলো।

ক্লাসের দ্বিতীয় দিনেই খালেকুজ্জামান স্যার ও আনোয়ার স্যার আমাকে, রাজ্জাককে তার রুমে ডেকে নিয়ে গেলেন এবং কাউন্সিল গঠন সম্পর্কে আলোচনা করলেন। উনার ভাষ্য ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য এর বিকল্প নেই।

আমরাও ক্লাসে আলোচনা করে স্যারকে ইতিবাচক সাড়া দিলাম।এর মধ্যে রাজনীতি থাকা না থাকা নিয়ে “হ্যাঁ”,”না”ভোট হলো। এতে “হ্যাঁ”জয়যুক্ত হয়।

শুরু হলো রাজনীতি মুক্ত কলেজ করার আন্দোলন, পাশাপাশি কাউন্সিল গঠনের প্রক্রিয়া।

প্রয়াত অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাফিজ উদ্দিন স্যার ও সমমনা শিক্ষক ও ছাত্রদের উদ্যোগে গঠিত হয় ঢাকা সিটি কলেজ ছাত্র কাউন্সিল ।

সৌভাগ্যক্রমে আমরা কিছু বন্ধু “নির্বাচন ও সিলেকশন” দুই ভিত্তিতে নির্বাচিত হই।

তখন স্যারের যে টিম ছিলো তা ছিলো ভয়ানক, প্রয়োজনে বুকে গুলি নেবে তারপরেও কলেজকে সন্ত্রাস মুক্ত, রাজনীতি মুক্ত করে ছাড়বে।

যেই কথা সেই কাজ। কাউন্সিলর ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে আন্দোলন বেগবান হলো, আমরা সফল হলাম।

শুরু হলো ঢাকা সিটি কলেজের নতুন অধ্যায়।

প্রিন্সিপাল স্যার সব সময় বলতেন ৯১ সালে আমার সহকর্মী অর্থাৎ শিক্ষকবৃন্দ ও কাউন্সিলরগণ ছিলো আধুনিক ঢাকা সিটি কলেজের রুপকার।

গাজী স্যার, খালেকুজ্জামান স্যার, মিনহাজ স্যার, সুভাস স্যার,মোহাম্মদ আলী স্যার,কাজেলেন্দু দে স্যার,শামসুল হক স্যার, আতাম স্যার, নূর মুহাম্মদ জায়েদ স্যার, হেলাল স্যার,নাহিদ স্যার,ইউসুফ আলী চৌধুরী স্যার, শামসুল আরেফিন স্যার, বর্তমান ভাইস প্রিন্সিপাল মোশাররফ স্যার, সেলিম স্যার, মকবুল স্যার, ইয়ান্ট্রু সরকার স্যার,আবুল কাসেম স্যার,আব্দুল হাই স্যার, আক্তার স্যার,শফিক স্যার,আনোয়ার স্যার, শাহজাহান খান, সালমা আপা, সেলিনা আপা, বিলকিস আপা, নাঈমা ম্যাডাম আরো অনেকে এই মুহুর্তে সবার নাম মনে করতে পারছি না।

ঘটনা হলো একটি প্রতিষ্ঠান তখনই সফলতা লাভ করে যখন তার কমান্ডার ও সোলজারের সমন্বয় সঠিক হয়। ঢাকা সিটি কলেজের সোলজাররা ছিলেন সৎ, কর্মঠ, সাহসী যা প্রিন্সিপাল হাফিজ স্যারের হাতকে অনেক শক্তিশালী করেছিলো।

ঢাকা সিটি কলেজ ছাত্র কাউন্সিল থেকেই কাউন্সিলরদের বিদায়ের সময় ধারণা আসে ঢাকা সিটিয়ান ক্লাব করার।